সোমবার রাতে পূর্ব লাদাখের গলওয়ান উপত্যকায় চিন ভারতের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ লেগে গেল। রাতের অন্ধকারে আট ঘণ্টা ধরে পাথর ও রড দিয়ে আক্রমণ চালালো চিনা সেনা। লাগাতার মারা হল কাটাতার জড়ানো ব্যাটন দিয়েও। চিনের পিপিল লিবারেশন আর্মির এই অতর্কিত হামলায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৩ জনের। এর মধ্যে রয়েছেন কর্নেল সন্তোষ বাবু। প্রাণে বেঁচে ওঠা এক সেনাকর্মীর কথায়, "বহু নিরস্ত্র জওয়ানকে ওরা মেরেছে। অনেকে এই আচমকা হামলা থেকে বাঁচতে গলওয়ান নদীতে ঝাঁপ দেন।" সরকারি বিবৃতি অনুযায়ী, অন্তত ২৪ জন জওয়ান মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। লেহ এর এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১১০ জন। স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সূত্র অনুসারে, ভারতীয় সেনারাও চিনকে পাল্টা জবাব দিয়েছে। চিনের কম্যান্ডিং অফিসার সহ ৪০ জন চিনা সেনাকে নিকেশ করেছে ভারতীয় জওয়ানরা। জানা গিয়েছে, আজ সকালে হেলিকপ্টার দিয়ে চিনা সেনাবাহিনীর লাশ সরানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে লাল ফৌজ। তবে বেজিং থেকে এই ঘটনায় এখনও কোনও বিবৃতিই জারি করা হয়নি।
সংক্ষিপ্ত ভাষণে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন,
‘‘ভারত শান্তি চায়। কিন্তু কেউ প্ররোচনা দিলে, যে কোনও পরিস্থিতিতে তার উপযুক্ত জবাব দিতেও প্রস্তুত। তাঁদের বলিদান ব্যর্থ হতে দেওয়া হবে না৷’’
"আমাদের বীর জওয়ানরা মারতে মারতে মরেছেন৷ গোটা দেশ তাঁদের জন্য গর্বিত৷"
"দেশের অখণ্ডতা আমাদের কাছে সবার উপরে। তা নিয়ে কোনও সমঝোতা করা হবে না।"
"আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, জওয়ানদের বলিদান ব্যর্থ হবে না৷ আমাদের জন্য দেশের অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্ব সবার আগে৷ ভারত শান্তি চায়, কিন্তু প্ররোচিত করলে যে কোনও অবস্থায় যথাযথ যথাযথ জবাব দিতে সক্ষম ভারত ৷ এই নিয়ে কারও কোনও সন্দেহ থাকা উচিত নয়৷"
শহিদ জওয়ানদের বীরত্বকে প্রণাম জানিয়ে বুধবার এক সংক্ষিপ্ত ভাষণে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, ‘‘ভারত শান্তি চায়। কিন্তু কেউ প্ররোচনা দিলে, যে কোনও পরিস্থিতিতে তার উপযুক্ত জবাব দিতেও প্রস্তুত। তাঁদের বলিদান ব্যর্থ হতে দেওয়া হবে না৷’’ তিনি বলেন, 'আমাদের বীর জওয়ানরা মারতে মারতে মরেছেন৷ গোটা দেশ তাঁদের জন্য গর্বিত৷' দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে যে কোনও বোঝাপড়ার প্রশ্ন নেই, সে কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশের অখণ্ডতা আমাদের কাছে সবার উপরে। তা নিয়ে কোনও সমঝোতা করা হবে না।’’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, জওয়ানদের বলিদান ব্যর্থ হবে না৷ আমাদের জন্য দেশের অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্ব সবার আগে৷ ভারত শান্তি চায়, কিন্তু প্ররোচিত করলে যে কোনও অবস্থায় যথাযথ যথাযথ জবাব দিতে সক্ষম ভারত ৷ এই নিয়ে কারও কোনও সন্দেহ থাকা উচিত নয়৷' ভাষণ শেষে নিহত সেনা জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানাতে দু’মিনিটের নীরবতা পালনও করা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মত, ভারতের লজিস্টিক পরিকাঠামগত বিকাশই মাথাব্যথা চিনের। সেই উদ্বেগেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পার করে বার্তা দিতে চাইছে চিন সেনা। এমনকী তারা ভারতের অঞ্চল দখলের অভিসন্ধিতেও আক্রমণ শানাতে পারে। ইতিমধ্যে সীমান্তের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে। এর সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় সুপারসনিক ক্রুজ ব্রহ্মোস মিসাইলকে অপারেশন ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনীতে যুক্ত হওয়ার পরেও প্রথমবার ব্যবহারের জন্য কোন আগ্নেয়াস্ত্র বা মিসাইলকে অপারেশন ক্লিয়ারেন্স দিতে হয়। তাই এটা বলাই যায় ভারত যুদ্ধের জন্য ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে দিয়েছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *