ইতিহাস এবং কিংবদন্তির সংমিশ্রণ থেকে যেটুকু তথ্য পাওয়া যায় সেটা এইরকম ষোড়শ শতাব্দীর শেষ দিকে হুগলী জেলার রামনগর অঞ্চলে বিষ্ণুদাস নামে এক স্থানীয় ক্ষত্রিয় রাজা রাজত্ব করতেন, রাজার ভাই ভারামল্ল ছিলেন সংসারবিবাগী যোগী। স্থানীয় গুড়েভাটা গ্রামের মুকুন্দরাম ঘোষ রাজবাড়ির গোশালা দেখাশোনায় নিযুক্ত ছিলেন।
এখন, যেখানে তারকেশ্বরের মন্দির, সেই অঞ্চলের নাম তখন ছিল তাড়পুর। সেখানে জায়গাটা তখন নলখাগড়ায় ভরা নিচু জমি ছিল আর আশেপাশে বনবাদাড়ে ঘেরা। সেই বনের মাঝে একটা রহস্যময় পাথরের ছোট স্তম্ভ ছিল। প্রবাদ এইরকম প্রচলিত যে, প্রতিদিন রাজবাড়ীর গরুরা জঙ্গলে চরতে গিয়ে ওই শিলাস্তম্ভের উপর দাঁড়াত, আর তাদের বাঁট থেকে দুধ ঝরে পড়ত।একদিন জনশ্রুতি শুনে মুকুন্দরাম বনের ভিতর গিয়ে অভূতপূর্ব দৃশ্যটি নিজের চোখে দেখলেন এইবার তিনি রাজার ভাইকে খবর দিলেন।
রাজা ভারামল্ল তখন ঐ শিলাস্তম্ভকে শিব লিঙ্গরূপে রামনগরে এনে প্রতিষ্ঠা করতে উদ্যোগী হলেন। কিন্তু অনেক মাটি খুঁড়েও পাথরের মূল খুঁজে পাওয়া গেল না। এরপরের জনশ্রুতি আবার এইরকম। সবাই যখন হতাশ হয়ে ফিরে আসেন। সেইসময় কোন এক রাতে রাজার ভাই ভারামল্ল স্বপ্ন দেখলেন, স্বয়ং শিব তাঁকে জানাচ্ছেন যে, তিনি তারকেশ্বর শিব।তিনি ঐ বন থেকে গয়া ও কাশী পর্যন্ত ছড়িয়ে আছেন। সুতরাং তাঁকে তাড়পুরের জঙ্গল থেকে উচ্ছেদ না করে ওখানেই তাঁকে প্রতিষ্ঠা করা হোক।
এরপর স্বপ্নাদিষ্ট ভারামল্ল ও মুকুন্দরাম রাজার সহযোগিতায় বন কেটে পরিষ্কার করে তাড়পুরেই পাথরের স্তম্ভের উপর একটি মন্দির নির্মাণে ব্রতী হলেন। মুকুন্দ ঘোষকে শিবের সেবা পুজো করবার ভার অর্পণ করা হয়।মুকুন্দরামই হলেন তারকনাথের প্রথম সেবক। বিষ্ণুদাসের মৃত্যুর পর রাজা হন ভারামল্ল।যখন মুকুন্দরাম মারা গেলেন সেইসময় ভারামল্ল ১৭২৯ খ্রিস্টাব্দে তারকেশ্বর মঠের প্রতিষ্ঠা করেন। মঠের মোহন্ত নির্বাচিত হন দশনামী শৈব সম্প্রদায়ের মায়াগিরিকে। পরবর্তীতে মায়াগিরির হাতেই মঠের দায়িত্বভার তুলে দেয় রাজা ভারামল্ল।এই হল তারকেশ্বর শৈবতীর্থের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস ও কিংবদন্তির মিশ্রিত কাহিনী।
সমগ্র পৃথিবী তথা ভারতবর্ষের যে কটি স্থান জুড়ে শ্রী শ্রী দেবাদিদেব মহাদেব বিরাজ করছেন তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার তারকেশ্বর ধাম একটি অন্যতম প্রধান স্থান । পূর্ব দিকে গঙ্গা ও দক্ষিণ- পশ্চিমে দামোদরের তীরে এই স্থানটি অবস্থিত । এটি একটি অতি প্রাচীন স্থান । সুদূর মুঘল যুগ থেকে বহু উত্থান ও পতনের সাক্ষী এই অঞ্চলটি । এই অঞ্চলে বহু বিবাহ প্রথা ও সতিদাহ প্রথা এত বেশি প্রচলিত ছিলো যে স্বয়ং ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর ও রাজা রাম মোহন রায় এর বিরুদ্ধে তুমুল সংগ্রাম চালিয়ে ছিলেন । এছাড়া নরবলি এবং সহমরন প্রভৃতি মধ্যযুগীয় কুসংস্কারের খুবই প্রভাব ছিল । বিভিন্ন মনীষীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এবং শ্রী শ্রী বাবা তারকনাথের পূণ্য মাহাত্ম্য প্রচারের মাধ্যমে ও তার কৃপায় বর্তমানে এই অঞ্চলটি খুবই সুন্দর ও মনোরম ।
ইতিহাস খুললে জানা যায় যে অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে কেশব হাজারি নামে একজন রাজপুত বৃদ্ধ বয়সে রাম নগরে আসেন । তিনি ছিলেন বারানসির অযোধ্যা প্রদেশের একজন জমিদার । তিনি মুসলমানদের অত্যচারে সেই স্থান ত্যাগ করে এই বঙ্গের রামনগরে বসবাস করেন এবং রাজত্ব স্থাপন করেন । রামনগর তখন ছিল বালিগড়ি পরগনার অধীনে । কেশব হাজারির দুই পুএ বিষ্ণুদাস ও ভারামল্ল এবং এক কন্যা ভানুমতি । পরবর্তী কালে বিষ্ণুদাস বাহির গড়ায় এবং ভারামল্ল রামনগরে ঘরবাড়ি তৈরি করে বসবাস করতে থাকেন এবং রাজত্ব চালাতে থাকেন ।
রাজা ভারামল্ল রামনগরে রাজপাট বিস্তার করেন । তার একটি বিশাল গোশালা ছিল । গোশলার কপিলা গাই খুবই সুন্দর এবং রাজার অত্যন্ত প্রিয় ছিল । হঠাৎ কপিলার দূধ কমে যাচ্ছে এই খবর শুনে রাজা তার গোশালার পরিচালক মুকুন্দ ঘোষকে ডেকে তার কারন জানতে চায় । কিন্তু রাজার প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারলেন না মুকুন্দ ঘোষ । একদিন কপিলা গাইকে লক্ষ্য করে এক অলৌকিক ঘটনা দেখে মুকুন্দ ঘোষ অবাক হয়ে গেলেন । তিনি দেখলেন বনের মধ্যে একটি চমৎকার কালো পাথর তার মাঝখানটিতে একটি বিরাট গর্ত । কপিলা সেই গর্তের উপর স্তন রেখে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে এবং দূধ আপন ইচ্ছাতে সেই গর্তের উপর পড়ছে । দূধ শেষ হতেই কপিলা সেই স্থান ত্যাগ করে । পরপর কয়েক দিন একই ঘটনা দেখে মুকুন্দ ঘোষ রাজাকে সব জানালেন ।
সেই সময় আরো একটি ঘটনা ঘটলো ।
তারকেশ্বর লীলামৃত থেকে জানা যায় যে উওড়াখন্ডের যোগী মঠের মোহন্ত নিষ্পাণ গিরি তিনি তার প্রিয় শিষ্য মায়াগিরিকে ধর্ম প্রচারের জন্য এদেশে পাঠান । তিনি এসে সেই বনের ভিতরেই আশ্রয় নেন । তিনি দিনের বেলায় শিব ধর্ম প্রচার করতেন এবং রাত্রি বেলায় তপস্যা করতেন । দিনে দিনে সন্ন্যসীর কথা ক্রমশ প্রচার হতে থাকে । রাজা একই সঙ্গে সন্ন্যসী এবং কপিলার ঘটনার অনুসন্ধানের জন্য সৈন্য সমেত বনের ভিতরে প্রবেশ করলেন । অনেক খোঁজ চালানোর পর রাজা সন্ন্যাসীর দেখা পেলেন । রাজা দেখলেন সন্ন্যাসী ও তার শিষ্য একটি মৃত ত্রিপদ অশ্বের পরির্চয্যা করছেন । তিনি সন্ন্যাসীকে জিজ্ঞাসা করলেন কে আপনি ? কেন এই বনের ভিতরে বাস করছেন এবং কেনই বা এই মৃত অশ্বের পরির্চয্যা করছেন ?
সন্ন্যাসী বললেন আমি গৃহত্যাগী সন্ন্যাসী । আমি এই বনের ভিতর অনাদি লিঙ্গের সাধনা করছি এবং এই মৃত অশ্ব আমার বাহন ।
রাজা বললেন এই মৃত অশ্ব কেমন করে আপনার বাহন হবে ? এই অশ্বে চেপে যদি আপনি ঘুরে আসতে পারেন তবেই আপনার কথা বিশ্বাস করবো না হলে আপনাকে কঠোর শাস্তি দেবো ।
সন্ন্যাসী বললেন, দেবাদিদেব মহাদেবের করুনায় সবই সম্ভব । আশ্চর্য হয়ে সবাই দেখলেন সন্ন্যাসীর শিষ্য মন মুকুন্দপুর গিরি অজ্ঞান হয়ে পরে রইলেন এবং মৃত অশ্ব জিবীত হয়ে উঠৈ দাঁড়িলো । সন্ন্যাসী সেই অশ্বের পিঠে চড়ে বনের ভিতর থেকে ঘুরে আসলেন । অশ্বটি পুনরায় মৃত হলো এবং শিষ্য মনমুকুন্দ জ্ঞান ফিরে পেলেন । এই ঘটনায় রাজা সহ সকালেই হতবাক হয়ে পরলেন এবং তিনি রাজাকে বনের ভিতর সেই অপূর্ব শিলা মূর্ত্তির দর্শন করালেন এবং বললেন এই মূর্ত্তিই তার আরাধ্য দেবতা । ত্রাণকর্তা মহেশ্বর এই দেশে তারকনাথ নামে অবতীর্ণ হয়েছেন এবং রাখালদের ধান কূটবার কথা ও তার প্রিয় কপিলার দূগ্ধ দানের কথাও তিনি সন্ন্যাসীর মুখে শুনলেন । রাজা ভক্তিভরে প্রনাম করলেন এবং শিলাখানি তুলে নিয়ে নিজের রাজা দরবারে প্রতিষ্ঠা করবার জন্য সন্ন্যাসীর কাছে অনুমতি চাইলেন । সন্ন্যাসীও অনুমতি দিলেন । কিন্তু একশো খননকারী বারো দিন চেষ্টা করেও মূর্ত্তি তুলতে পারলেন না ।
রাজা খুবই চিন্তায় পরলেন । একদিন রাত্রে রাজা ভারামল্ল স্বপ্নে দেখলেন বাবা তারকনাথ সন্ন্যাসীর ভেশ ধরে তাকে বলছেন অকারন কেন দুঃখ পাও?
" ইয়া গঙ্গা বারানসী ব্যাপ্ত মোর মূল ।
প্রতিষ্ঠিত হয় হেথা ভূবণ অতুল ।।
হেথায় মন্দির কর , কর তীর্থধাম ।
তারকেশ্বর মিটাইবেন সর্বমনস্কাম ।। "
এই আদেশের পর রাজার ঘুম ভেঙে যায় । স্বপ্নের কথা সন্ন্যাসীকে জানান । সন্ন্যাসীর নির্দেশে জঙ্গল পরিষ্কার করে মন্দির স্থাপন করা হয় । রাজা সন্ন্যাসীর থেকে দীক্ষা নেন এবং সন্ন্যাস ব্রত গ্রহন করেন । তখন থেকে সেবা তার জীবনের ব্রত হয় এবং সমস্ত রাজত্ব তিনি শ্রী শ্রী বাবা তারকনাথের সেবায় উৎসর্গ করেন ।
শ্রাবণের সোমবার তারকেশ্বর ধামে কেন যান লক্ষ ভক্ত, জানুন শিব-মহিমা :-
শ্রাবণ মাস। ঝির ঝিরে বৃষ্টি অথবা ঘোর ধারাপাত। তার মধ্যেই কাঁধে বাঁক নিয়ে হাজার হাজার মানুষ। শ্রাবণের কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলে প্রতি শনিবারের এ অতি পরিচিত দৃশ্য। বাংলার অন্যতম প্রধান শৈবতীর্থ তারকেশ্বরধামের উদ্দেশে মানুষের এই তীর্যযাত্রা বঙ্গসংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। পথচারী মানুষের যত দুর্ভোগই সৃষ্টি করুক না কেন এই বাৎসরিক তারকেশ্বর যাত্রা, তারকনাথের মহিমা অস্বীকার করতে পারেন না কেউই। প্রশ্ন জাগে, বাংলায় তো শিব মন্দিরের অভাব নেই, তাহলে এই একটি মাত্র মন্দিরকে ঘিরে এই
বিপুল উৎসাহের কারণ কী?
• হুগলি জেলার এই মন্দিরের ইতিহাস অতি প্রাচীন। কিংবদন্তি জানায়, বিষ্ণুদাস নামে জনৈক শিবভক্ত অযোধ্যা থেকে হুগলিতে এসে সপরিবারেই সেখানে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু স্থানীয় লোকজন তাঁকে সন্দেহের চোখে দেখতেন। খানিকটা একঘরে হয়েই বাস করতেন বিষ্ণুদাস। পরিস্থিতি এমনটাই হয়ে দাঁড়ায় যে, বিষ্ণুদাসকে স্থানীয় মানুষ বাধ্য করে কঠিন পরীক্ষা দিয়ে প্রমাণ করতে যে, তিনি সৎ মানুষ। বিষ্ণুদাসকে তপ্ত লোহার একটি দণ্ডকে খালি হাতে ধরতে বলা হয়। তিনি তা-ই করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। সেই সঙ্গে মনে গভীর যন্ত্রণা অনুভব করতে থাকেন। তিনি তাঁর ইষ্টদেবতা মহাদেবকে ডাকতে থাকেন এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধারের জন্য।
• কয়েকদিন পরে বিষ্ণুদাসের ভ্রাতা স্থানীয় জঙ্গলে এক আশ্চর্য বিষয় লক্ষ্য করেন। তিনি দেখেন, গরুরা প্রতিদিন জঙ্গলের একটি বিশেষ স্থানে গিয়ে দুধ দিয়ে আসে। তিনি এই স্থানে গিয়ে একটি পাথর দেখতে পান।
• এই সময়েই বিষ্ণুদাস স্বপ্নাদেশ পান যে, জঙ্গলে তাঁর ভাইয়ের দেখা ওই পাথরটিই মহাদেবের তারকেশ্বর রূপ। সেখানে বিষ্ণুদাস একটি মন্দির নির্মাণ করেন। এবং সেই স্থানই তারকেশ্বর ধাম নামে পরিচিত হয়।
• সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারকেশ্বর মন্দির অনেকবার নির্মিত ও পুনর্নির্মিত হয়েছে। বর্তমান মন্দিরটিও বেশ প্রাচীন। ১৭২৯ সালে বিষ্ণুপুরের মল্ল রাজারা এই মন্দির নির্মাণ করান।
• তারকেশ্বর মন্দির বাংলার চালা স্থাপত্যের আদর্শ উদাহরণ। যে ক’টি প্রাচীন চালা মন্দির বাংলায় টিকে রয়েছে, তার মধ্যে তারকেশ্বর অন্যতম।
• তারকেশ্বর স্বয়ম্ভূলিঙ্গ। এই লিঙ্গের মহিমা অপার।
• প্রাচীন এই কিংবদন্তির সঙ্গে কালে কালে যুক্ত হতে থাকে দেবমহিমা। তারকেশ্বর মন্দির-সংলগ্ন পুষ্করিণী দুধপুকুরকে ঘিরেও গড়ে ওঠে মিথ। বলে হতে থাকে, এই পুকুরের জল আরোগ্যকারী। ক্রমেই বাড়তে থাকে পুণ্যার্থীর ভিড়।
• মহাশিবরাত্রি ও চৈত্র সংক্রান্তিতে তারকেশ্বর মন্দিরে বিশেষ উৎসব হয়। প্রতি সোমবার হয় বিশেষ পূজা। তবে, শ্রাবণের সোমবারগুলিতে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটে তারকনাথকে গঙ্গোদকে স্নান করানোর উদ্দেশ্যে।
• প্রাচীন কিংবদন্তি যা-ই বলুক না কেন, তারকেশ্বর যাত্রাকে সর্বজনীন করে তোলে ১৯৭৭ সালের বাংলা ছবি ‘বাবা তারকনাথ’। অতি জনপ্রিয় এই সিনেমা তারকেশ্বর মহিমাকে পুনর্নবীকৃত করে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।
আজও বহু পূর্ণার্থী এই শ্রাবণ মাসে মনস্কামনা পূর্ন হওয়ার আশায় বা পূর্ন হওয়ার কারণে শেওড়াফুলির নিমাই তীর্থ ঘাট , দক্ষিনেশ্বরর ঘাট , বাবুঘাট এবং কালীঘাট থেকে গঙ্গা জল তুলে কাঁধে বাঁক নিয়ে বাবার মাথায় জল ঢালার উদ্দেশ্য তারকেশ্বরে যান ।
তারকেশ্বরে বাবার মাথায় জল ঢালারমহিমা
১) সারাজীবন সুখী থাকার আশীর্বাদ
সারাজীবন সুখে ও আনন্দে কাটাতে তো সবাই চায়। কিন্তু জীবনে সমস্যা যেন পিছু ছাড়েনা। তাই তো?সেই জন্যই শ্রাবণ মাস কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারন এইদিনে মহাদেবকে তুষ্ট করলে। মহাদেবের আশীর্বাদে সারাজীবন আনন্দে কাটানো সম্ভব। কারন এতে সুখী দীর্ঘ জীবন পাওয়া সম্ভব। বিবাহিত জীবন খুব সুখের হয়। বিবাহিত মহিলারা স্বামী ও সন্তানের দীর্ঘ জীবনের জন্য এই ব্রত করতে পারেন। সুখ, সমৃদ্ধি, যশ, খ্যাতি, আর্থিক উন্নতি সবই পাবেন মহাদেবের আশীর্বাদে।
২) গ্রহদোষ কাটাতে
গ্রহদোষে জীবন জর্জরিত? সব কাজে বাঁধা আসছে? হাজার হাজার টাকা জ্যোতিষীর পিছনে খরচা না করে, মহাদেবের শরণাপন্ন হন। মহাদেবের আশীর্বাদেই কেটে যাবে সব গ্রহদোষ। বিশেষ করে শনির গ্রহদোষ। যেটা কাটিয়ে ওঠা খুবই কঠিন। সেটাও খুব সহজেই কেটে যাবে।
৩) আদর্শ জীবন সঙ্গী পেতে
মহাদেব শুধু জগৎকে রক্ষা করেন না। ভগবান শিবকে আদর্শ পুরুষ বলেও মনে করা হয়। তাই নিজের জন্য একজন আদর্শ জীবন সঙ্গীও পেতে পারেন মহাদেবের আশীর্বাদে। তাই একবার তারকেশ্বরে গিয়ে নিজের জন্য আদর্শ জীবনসঙ্গী চাইতে ভুলবেন না। কারন জীবনে একটা আদর্শ জীবনসঙ্গী পেলে সারাজীবন আনন্দে থাকা যায়।
৪) দুরারোগ্য ব্যাধি ও অকালমৃত্যু থাকবে
বহুদুরে বাড়ির কেউ কঠিন রোগে আক্রান্ত? তাহলে তার স্বাস্থ্যের উন্নতির কামনায় শিবের পূজা করুণ। কারন শাস্ত্রমতে, এই শ্রাবণ মাসে মহাদেবের আরাধনা করলে, স্বাস্থ্য ভালো থাকে। আর নানারকম রোগ থেকে অনেক দূরে থাকা যায়। কঠিন ব্যাধি ধীরে ধীরে সেরে ওঠে।
৫) অন্যান্য সুফল
এগুলি ছাড়াও অকালমৃত্যু ও বিপদ আপনাকে ছুঁতে পারবেনা।এইমাসে তারকেশ্বরে গিয়ে জল ঢাললে, খুব সহজেই মোক্ষলাভ সম্ভব। শ্রাবণ মাসের এই ব্রত থেকে সকল দেবদেবীই তুষ্ট হন। অর্থাৎ সকল দেবদেবীর আশীর্বাদ পাওয়া যায়।
বাড়িতে অশুভ শক্তির বিনাশ হয় ও সংসারে শান্তি বজায় থাকে।
ওঁ নমঃ শিবায় ।।
Your email address will not be published. Required fields are marked *