করোনা ভাইরাসের প্রভাবে রাজ্যে বিপর্যয় আগে থেকেই চলছিল, এর সাথে এসে যোগ দিল মহাপ্রলয় “আমফান”। আমফানের তাণ্ডবে রাজ্যের একাধিক জেলা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এর আগে কবে রাজ্যবাসী এত বড় ভয়ঙ্কর ঝড়ের মুখে পরেছেন তা হয়তো মনে নেই।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আমফান যে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে তার ক্ষয়ক্ষতির পরিমান এবং তহবিলের কথা মাথায় রেখে বৃহস্পতিবার নবান্নে বিভিন্ন দফতরের মন্ত্রিদের সাথে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনিতেই করোনা মোকাবিলায় যে তহবিল ঘোষণা করা হয়েছিল তার অনেকটাই ইতিমধ্যেই খরচ হয়ে গিয়েছে। এরপর আমফানের তাণ্ডবের ফলে যে ক্ষয়ক্ষতি হল তার জন্য কেন্দ্রের কাছে অর্থ সাহায্য চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এরসাথেই রাজ্যে আমফানের কবলে যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবার কথাও ঘোষণা করা হয়।
এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী পরিস্কার জানিয়ে দেন, “ ত্রান এর জন্য যে অর্থ বরাদ্দ করা হবে, তা নিয়ে কোনোরকম অপব্যয় তিনি বরদাস্ত করবেন না। আমফানের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান মেতানর জন্য সেইদিন তিনি এক হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করার কথা বলেছিলেন।
উত্তর এবং দক্ষিন ২৪ পরগণার যে সমস্ত জায়াগায় পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে তা দ্রুত মেটানোর নির্দেশ দেন মুক্ষমন্ত্রি।যে সমস্ত নদী বাঁধ ও রাস্তাঘাট ভেঙে গিয়েছে সেগুলি মেরামতির নির্দেশ দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন সারান রাস্তা যেন তিন বছর স্থায়ী হয়। টানা লক ডাউনের ফলে একেই রাজ্যের আয় প্রায় নেই বললেই চলে, এই পরিস্থিতিতে এক হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করা রাজ্যের পক্ষে কঠিন। তাই তিনি কেন্দ্রের কাছে সাহায্যের আর্জি জানান এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কে আহ্বান জানান রাজ্যের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের জন্য।
এরপরেই প্রধানমন্ত্রি টুইট করেন শুক্রবার তিনি রাজ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখবেন এবং এই কঠিন পরিস্থিতিতে বাংলাকে সব্রকম ভাবে সাহায্য করবেন। পরেরদিন শুক্রবার প্রধানমন্ত্রি নরেন্দ্র মোদী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সাথে রাজ্যের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করার পর রাজ্যের জন্য এক হাজার কোটি টাকা অর্থ সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন। এছারাও মৃতদের পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
এই ঘোষণার পরেই আপৎকালিন ব্যবস্থা হিসাবে কেন্দ্র এক হাজার কোটি টাকা মঞ্জুর করে। রিজার্ভ ব্যাংককে রাজ্য সরকারের অ্যাকাউন্টএ এই টাকা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।“ন্যাশনাল ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ফান্ড” থেকে এই টাকা দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।অর্থমন্ত্রকের কথায় এই টাকা প্রাথমিক ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য দেওয়া হচ্ছে, কেন্দ্রিয় দল রাজ্যের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত আর্থিক সাহায্যের অঙ্ক স্থির করবে।
পশ্চিম বঙ্গের আমপান- বিধ্বস্ত অঞ্চল আকাশ পথে পর্যবেক্ষণ করলাম।
— Narendra Modi (@narendramodi) May 22, 2020
ঘূর্ণি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের
ত্রাণ, পুনর্বাসন এবং পুনর্নির্মাণ এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত রকম সাহায্য করবে। pic.twitter.com/FseTTCpZSM
Your email address will not be published. Required fields are marked *