‘আম্ফান’ আন্দামান সাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় যার গতিপথ নিয়ে নানারকম তত্ত্ব উঠে আসছে। কোন পথে এই ঝড় যাবে, এর ক্ষতিসাধন করার ক্ষমতা কতটা, তা যেন এখনও স্পষ্ট হচ্ছে না। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম, বিভিন্ন রকম করে পূর্বাভাস দিচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ের। তবে এই ঝড় যে শক্তিশালী হয়ে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে, তা মনে করছেন অনেকেই।
উত্তর আন্দামান সাগরে গত ২৮শে এপ্রিল একটি ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়। পরদিন একটি নিম্নচাপ তৈরি করে ১ম মে উত্তর-পশ্চিম দিকে চলে যায় এবং তা শক্তি হারিয়ে ফেলে। এর পর পুনরায় আন্দামান সাগরে একটি ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয় এবং দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও দক্ষিণ আন্দামান সাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চলে আরো অপর একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়।
আন্দামান সাগরে এখনো স্থির সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’। তবে এর মধ্যেই উত্তর ভারত মহাসাগর এবং সংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগরের ওপর আরও একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। সে ক্ষেত্রে দ্বিধার সৃষ্টি হয়েছে, কোনটির নাম হবে ‘আম্ফান’?
কারণ এ অঞ্চলে এই দুটি নিম্নচাপ বা ঘূর্ণাবর্তের মধ্যে যেটি আগে ঘূর্ণিঝড় রূপে আঘাত হানবে, তাহলে সেটিরই নাম হবে ‘আম্ফান’। সে ক্ষেত্রে আন্দামানে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের জন্য যেতে হবে নতুন নামের সন্ধানে। মূলত একটি ঘূর্ণিঝড়ের ধাপ থাকে চারটি। প্রথমে লঘুচাপ সৃষ্টির পর সেটি পরিণত হয় সুস্পষ্ট লঘুচাপে। তৃতীয় ধাপে নিম্নচাপ থেকে সৃষ্টি হয় গভীর নিম্নচাপে। এর পর সেটি সাইক্লোন বা সুপার সাইক্লোন হয়ে আঘাত হানে।
তবে আবহবিদরা জানিয়েছেন বুধবার থেকে আম্ফান শক্তি বৃদ্ধির প্রক্রিয়া শুরু করবে। বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী ১৭ই মে এই ঝড় আছড়ে পড়তে পারে ভারতীয় উপকূলে। এখন পর্যন্ত অভিমুখ তামিলনাড়ুর দিকে। আন্দামান সাগরের আবহাওয়া ঘন ঘন পরিবর্তন হয়। সেক্ষেত্রে কোনও কারণে উত্তর-পশ্চিমে ঘুরলে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে প্রভাব ফেলতে পারে, উড়িষ্যা উপকূলেও প্রবল উড়িষ্যা উপকূলেও প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আর আরও ঘুরে এলে একটু এধার-ওধার হলে ছাড়বে না পশ্চিমবঙ্গকে।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্পষ্ট হয়ে যাবে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের যাবতীয় গতিবিধি। তখন স্পষ্ট করেই বলা যাবে কোনও রাজ্যে সরাসরি আছড়ে পড়বে এই ঘূর্ণিঝড়। আর কোন রাজ্যে তার প্রভাব পড়বে, তাও স্পষ্ট হবে আগামী দুদিনের মধ্যে।
আবহবিদরা আরও জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান যদি ওড়িশা উপকূলে ধাক্কা খেয়ে বাংলাদেশ বা মায়ানমারের দিকে অভিমুখ বদল করে, তখনই একমাত্র সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে। তা হলে পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কলকাতা, হুগলি, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও দুর্যোগের আশঙ্কা রয়েছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Bah... Soumen... Carry on