করোনা ভাইরাসএর মৃত্যুমিছিল বেড়েই চলেছে গোটা বিশ্ব জুড়ে l হয়তো এই ভাইরাস কে সারাজীবন আমাদের সঙ্গী হিসাবে নিয়ে চলতে হবে l আমরা আগেই বলেছি এর ফলে শুধু ভারতই নয় সারা বিশ্বের অর্থনীতি চরম বিপযয়ের মুখে l প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই পরিস্থিতিকে চাঙ্গা করতে যে ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ এর ঘোষণা করেছিলেন তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামান প্রথম দিন সামনে এনে ছিলেন দেশের ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প গুলির কথা l আজ আমরা আলোচনা করবো অর্থমন্ত্রীর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনের ঘোষণা নিয়ে l
দেশে এই মুহূর্তে যে সমস্ত মর্মান্তিক ঘটনা গুলি সামনে আসছে তার বেশির ভাগটাই পরিযায়ী শ্রমিক দের নিয়ে l তাই প্রথম দিন অর্থমন্ত্রীর ভাষণে তাদের নিয়ে কোনো ঘোষণা না থাকায় বিরোধীদের তোপের মুখে পড়তে হয় l দ্বিতীয় দিনের কিস্তি তে তাই পরিযায়ী শ্রমিক এবং দেশের গরিব খেটে খাওয়া মানুষ দের নিয়ে একাধিক ঘোষনা করলেন অর্থমন্ত্রী l
বলা হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিক দের আগামী দুইমাসের জন্য বিনামূল্যে সবজি সরবরাহ করা হবে, এর ফলে প্রায় ৮ কোটি পরিযায়ী শ্রমিক উপকৃত হবেন l
প্রত্যেক শ্রমিক দের মাসে ৫ কিলো করে চাল/গম এবং ১ কিলো করে ডাল বিনামূল্যে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে l
রেশন কার্ড না থাকলেও এই সুবিধা পাওয়া যাবে এবং এই কাজ রাজ্য সরকারের মাধ্যমে করা হবে l
এতে প্রায় ৩৫০০ কোটি টাকা খরচ করা হবে l
অর্থমন্ত্রী বলেন "এক দেশ এক রেশন কার্ড" এর কাজ আগামী ৩১ শে মার্চ ২০২১ এর মধ্যে শেষ করা হবে l রেলওয়ে স্টেশন বা স্টেশন লাগোয়া জায়গাতে যারা ব্যবসা করেন তাদের জন্য ১০০০০ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেবার ব্যবস্থা করা হবে l
যেসমস্ত মহিলারা নাইট শিফটে কাজ করেন তাদের জন্য নতুন সুরক্ষাবিধি প্রকাশ করা হবে l
যেসমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকরা শহর থেকে পালিয়ে নিজস্স গ্রামে চলে যাচ্ছেন তাদের জন্য সরকার কাজের বন্দোবস্ত করবে l
এছাড়াও দৈনিক মজুরি ১৮২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০২ টাকা করা হয়েছে l
পরিযায়ী শ্রমিক দের রোজগারের জন্য এখনো পর্যন্ত ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে l
এর পাশাপাশি শ্রমিক দের বছরে একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা, শহরে কম মূল্যে বাড়ি ভাড়ার ব্যবস্থা সরকার করবে l
যে সমস্ত শ্রমিক গ্রামে ফিরে গেছেন তাদের জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েতে কাজের ব্যবস্থা করা হবে এতে প্রায় ২.৩৩ কোটি পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজের ব্যবস্থা করা হবে l
এরপর তৃতীয় দিনের কিস্তিতে অর্থমন্ত্রী কৃষি কাজ, মৎসচাষ এবং পশুপালন কে নিয়ে একাধিক ঘষোণা করেছেন l সব থেকে বড়ো সিদ্ধান্ত যা নেওয়া হয়েছে তা হলো এরপর থেকে কৃষকরা তাদের ফসল দেশের যেকোনো জায়গায় বিক্রি করতে পারবেন l এরফলে কৃষকরা যেখানে বেশি লাভ পাবেন সেখানে তাদের ফসল বিক্রি করতে পারবেন l কৃষকরা ফসল চাষ করার সময়ই জানতে পারবেন তার ফসলের দাম কত হবে l বিশেষ কিছু কৃষি ফসলের মজুতের উপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল সেটা তুলে নেওয়া হবে l এরফলে মুজতদাররা যেমন বেশি করে কৃষি ফসল কিনতে পারবে ঠিক তেমনি কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত ফসল বেশি করে বিক্রি করতে পারবেন l
মৌমাছি পালন করার ক্ষেত্রেও ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে l এতে প্রায় ২ লক্ষ মৌমাছি পালক কৃষক উপকৃত হবেন l
গঙ্গার পারে প্রায় ৮০০ হেক্টর জমিতে ভেষজ ঔষধ জাতীয় উদ্ভিদের চাষ করা হবে l
দুগ্ধজাত শিল্পের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন ইনসেনটিভ দেবার কথা ঘোষণা করা হয়েছে l
এর পাশাপাশি মৎসচাষে ২০ হাজার কোটি টাকা, গবাদি পশুর টিকা করণে ১৩ হাজার কোটি টাকা, খাদ্য পক্রিয়াকরণ শিল্পে ১০ হাজার কোটি টাকা, ডেয়ারি শিল্পের জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে l এর ফলে বহু কৃষক বা কৃষি কাজের সাথে যুক্ত মানুষেরা উপকৃত হবেন বলেই মনে করা হয়েছে l
"Covid-19 relief package" - প্রথম পর্ব : https://knowledge4cast.in/business/Covid-relief-package-part-1.php
Your email address will not be published. Required fields are marked *