1972 সালের সেপ্টেম্বরে মিউনিখ অলিম্পিকে ফিলিস্তিনি জঙ্গিদের দ্বারা ১১ জন ইসরায়েলি অ্যাথলিটিকে অপহরণ ও হত্যার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল কর্তৃক গোপনে হত্যা অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল, তার নাম অপারেশন ওয়ার্থ অফ গড !
বিশ্বের সেরা কোভার্ট অপারেশনগুলির মধ্যে বহুল আলোচিত৷ ইজরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ এই অপারেশন চালিয়েছিল ৷ ১৯৭২ সালে মিউনিখ অলিম্পিক চলাকালীন ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর নামের একটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন এগারোজন ইজারায়েলের অ্যাথলিটকে অপহরণ করে হত্যা করেছিল৷ এই ঘটনার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য অপারেশন ওয়ার্থ অফ গড প্ল্যান করে মোসাদ৷ জানলে অবাক হবেন এই অপারেশন চলাকালীন সারা ইউরোপ থেকে ওই জঙ্গিদের খুঁজে খুঁজে বার করে হত্যা করেছিল মোসাদের এজেন্টরা৷ আর এক একজনকে মারার কৌশলও ছিল চমকপ্রদ৷
প্রায় ১০ বছর ধরে ১২ জন জঙ্গিকে খুঁজে খুঁজে তাদের মেরেছিল মোসাদ৷ যা গুপ্তচরবৃত্তির ইতিহাসে আজও ‘এপিক’ বলে মনে করা হয়৷
যদিও ঐতিহাসিকভাবে ইসরায়েলের টার্গেট ছিল প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পি এল ও) এবং পপুলার ফ্রন্ট ফর লিবারেশন অফ প্যালেস্টাইনের (পি এফ এল পি) নেতাদের হত্যা করা কিন্তু এই গনহত্যার পরিপ্রেক্ষিতে ইজরায়েল (মোসাদ) গুপ্তহত্যার ক্রমবর্ধমান নাটকীয় ভাবে বাড়িয়ে দেয়, প্রধানমন্ত্রীর ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোশে দায়ান এর সভাপতিত্বে একটি গোপন ইজরায়েলি কমিটি ,ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর এর সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত প্রত্যেককে গুপ্তহত্যার অনুমতি দিয়েছিল বলে জানা যায়,
পৃথিবী ইসরাইল তথা পৃথিবীর বিখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এবং ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে গঠিত এই গঠিত হয় একটি দল যার নাম দেয়া হয় হিট স্কোয়ার্ড আর এই অপারেশনের নাম দেয়া হয়েছিল ওয়ার্থ অফ গড এবং তার কোড নাম ছিল "বায়োনেট" , এই টিমের সদস্যরা মিউনিখ গণহত্যার পরিকল্পনার সন্দেহজনক ব্যক্তিদের খোঁজ করতে করতে কয়েক বছর কাটিয়ে দিয়েছিল ,
ইজরায়েল গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ পরিচালিত এই স্কোয়াড প্রথমে পিএলওর আয়োজক এবং ইয়াসির আরাফাতের চাচাতো ভাই ওয়েল জায়েটারকে গুলি করে হত্যা করা হয় তার নিজের অ্যাপার্টমেন্টের লবিতে 1972 সালের অক্টোবর মাসে রোম শহরে,এরপরের টার্গেট হয় প্যারিসে থাকা মাহমুদ হামসারি
এরপর মোসাদ এর এক গোয়েন্দা ইতালিও সাংবাদিক সেজে টেলিফোনে হামসারির সঙ্গে যোগাযোগ করেন তার সঙ্গে ইন্টারভিউ নেবে বলে , মোসাদের বিখ্যাত বোমা বিশেষজ্ঞ হামসারির বাড়ির দরজা ভেঙে তার টেলিফোনের সঙ্গে বোমা বেঁধে রাখে এবং যখন আনসারী পরে ফোনে কথা বলতে যায় তখন অটোমেটিক ভাবে ওই বোম একটিভ হয়ে যায় এবং ওই বিস্ফোরণে মাহমুদ হামসারি মারা যায় |
পরের কয়েক মাসের মধ্যে আরও চার সন্দেহভাজনসহ বাসিল আল-কুবাইসি, হুসেন আবাদ আল-চির, জায়েদ মুছাশি এবং মোহাম্মদ বৌদিয়াকে হত্যা করা হয়েছিল।
অপারেশন ওয়ার্থ অফ গড এর অভিপ্রায়িত লক্ষ্য ছিল আলি হাসান সালামেহ, তিনি ফাতাহ এবং ব্ল্যাক সেপ্টেম্বরের অপারেশন প্রধান, মোসাদের "রেড প্রিন্স" হিসাবে পরিচিত |
1979 সালে অপারেশন ওয়ার্থ অফ গড প্রোগ্রামটি চূড়ান্ত মিশনের জন্য পুনরায় সক্রিয় হয়েছিল, যখন তিনি লেবাননের রাজধানী বেইরুট এ প্রায়শই আসতেন, হিট স্কোয়ার্ড সালামেহকে বেইরুটের একটি রাস্তায় রাখা গাড়ি বোমা দিয়ে হত্যা করেছিল ।
যেমন কোরান শরিফের মধ্যে রাখা হয়েছিল বোমা৷ যা খুলতেই বিস্ফোরণে এক জঙ্গির মৃত্যু হয়েছিল৷ প্রায় ১০ বছর ধরে ১২ জন জঙ্গিকে খুঁজে খুঁজে তাদের মেরেছিল মোসাদ৷ যা গুপ্তচরবৃত্তির ইতিহাসে আজও ‘এপিক’ বলে মনে করা হয়৷
Your email address will not be published. Required fields are marked *